শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:৪৮ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
Welcome To Our Website...
সংবাদ শিরোনাম :
বাগেরহাট-৪ সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে সড়ক অবরোধ; পিরোজপুরে জাতিয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে জেলেদের মধ্যে সাঁতার প্রতিযোগিতা ২০২৫ ইং উদযাপন ; নওগাঁর আত্রাইয়ে নবগঠিত মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত; মঠবাড়ীয়ায় জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত; আত্রাইয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন; কাউখালীতে জামায়াতে ইসলামীর ভোটকেন্দ্র প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত; কাউখালীতে মৎস্য সপ্তাহ-২০২৫ উদযাপন; ভাণ্ডারিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর ভোট কেন্দ্র প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত; বেলকুচিতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্বোধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত; টাইফয়েড এর টিকাদান কর্মসূচী নিয়ে আলোচনা; মোংলায় মেরিন এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নির্বাচনে রফিক সভাপতি, জাহিদুল সম্পাদক; জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ /২৫ উদযাপন; গোল্ডেন এওয়ার্ড ও সম্মাননা স্মারকে ভূষিত হয়েছেন মুফতী হারুনুর রশীদ হাবিবুল্লাহ্; অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে- জুলফিকার আলী ; আল-আকসা ফাউন্ডেশনের কুইজ প্রতিযোগীতা ২০২৫ এর প্রতিযোগীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান; মঠবাড়ীয়ায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মবার্ষিকী পালিত; কাউখালীতে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা ; বেলকুচিতে জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা; নওগাঁর শেখপুরা জামে মসজিদে মকতুবাদ শরীফের মাহফিল অনুষ্ঠিত; বেলকুচিতে আওয়ামী লীগ পূর্ণবাসনের চেষ্টা, সরকারি প্রোগ্রামে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা;

নওগাঁতে হারিয়ে যেতে বসেছে মৃৎশিল্প;

মোঃ ফিরোজ আহমেদ
নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ

নওগাঁর আত্রাইয়ে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি মাটির বিভিন্ন জিনিস পত্র।তবে পূর্ব পুরুষের মৃৎশিল্পের এ পেশাকে এখনও আঁকড়ে ধরে রেখেছেন আত্রাইয়ের মির্জাপুর, নন্দনালী পালপাড়ায় মাত্র কয়েকটি পাল পরিবার।এক সময় পালপাড়ায় দিনরাত মাটির জিনিসপত্র তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন প্রতিটি পাল বাড়ির লোকজন। কিন্তু বর্তমানে মৃৎশিল্পের চাহিদা দিনে দিনে কমে যাওয়ায় বেকার হয়ে পড়ছেন অনেকে। দারিদ্র্যতা যেন এইসব পাল সম্প্রদায়ের পরিবারে নিত্যদিনের সঙ্গী হয়েছে।তাদের ঘরে প্রায়ই অভাব অনটন লেগে থাকে।ফলে জীবিকার তাগিদে বাপ-দাদার এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন পালরা। এক সময় পালপাড়াতে পালরা রাতদিন জেগে মৃৎশিল্প তৈরিতে ব্যস্ত থাকতো।ছিল ক্রেতা-বিক্রেতাদের জমজমাট কেনাবেচা।পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সমান তালে মাটির জিনিসপত্র তৈরি করতেন। আগে যেখানে বেশ কয়েকটি পরিবার এ পেশায় কাজ করতো, এখন সেখানে কাজ করে মাত্র ৭/৮টি পরিবার।প্লাস্টিক পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে এই শিল্প।তবে গ্রামের নাম থাকলেও পূর্ব-পুরুষের রেখে যাওয়া মাটির জিনিসপত্র তৈরির নেই কর্মব্যস্ততা।আধুনিকতার যুগে কদর কমে হারিয়ে যেতে বসেছে প্রাচীন এ শিল্পটি। নন্দনালী পালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শ্রী নিত্যানন্দন পাল বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে মাটির তৈরি হাঁড়ি,পাতিল,শারা,ঢোকসা,কলস, ঘটি,ধুপতী,গাছাবাতি,মাটির ব্যাংক তৈরি করে আসছেন তিনি। সেই পণ্য বিক্রির টাকায় চলতো পুরো সংসার।এখন আর আগের মতো মাটির জিনিসপত্রের চাহিদা নেই।কোনো মতে মাটির শারা,ঢোকসা বানিয়ে বিক্রি করেরে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। শ্রী বিময় কুমার পাল বলেন,এক সময় বাবার সঙ্গে রাত দিন জেগে হাড়ি-পাতিল বানিয়েছি।সেই সময় মাটির পাত্রের চাহিদা বেশিই ছিল। তখন ভালোভাবে আমাদের সংসার চলে যেত। এখন এ শিল্প নেই বললেই চলে।এ পেশায় আর কেউ থাকতে চায় না।গ্রামের অনেক ছেলে-মেয়েরা অন্য পেশায় চলে গেছে।কেউ মুদি দোকান করে ব্যবসায় জড়িয়ে যাচ্ছে। রন্জন পাল বলেন, এ শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে মাটি।সব মাটি দিয়েই মাটির জিনিসপত্র তৈরি করা যায় না।এসব তৈরির জন্য এটেল মাটির প্রয়োজন হয়।এ মাটি এখন পর্যাপ্ত পাওয়া যায় না।পাওয়া গেলেও দাম অনেক বেশি।এত দামে মাটি কিনে পাত্র তৈরি করে সঠিক দামে বিক্রি হয় না।এ কারণে অনেক পালরা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন,খুব অল্প বয়স থেকেই বাবার সঙ্গে এ কাজ শুরু করেছি।বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে এসে এ কাজ করছি।স্বামীর সঙ্গে সংসারের হাল ধরেছি। কিন্তু এখন খুব কম চলে মাটির পাত্র। বাপ-দাদার কর্ম ছেড়ে যেতেও পারি না। তাই কোনো মতে কিছু বাসনপত্র বানিয়ে বিক্রি করে সংসার চলে। সুমন পাল জানান,ছোট বয়সে বাবা দাদার সঙ্গে মাটি নিয়ে খেলা করতে করতে এ পেশায় চলে এসেছি। এখন এ পেশায় দিন চলে।আগে মাটির জিনিসপত্রের বেশ চাহিদা ছিল।পরিবারের সবাই একসঙ্গে তৈরি করতাম।এরপর রোদ্রে শুকিয়ে তা পুড়িয়ে বিক্রি করতাম। এখন মাটি থেকে শুরু করে কয়লা, কাঠের অনেক দাম। বিক্রি করে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্য কাজ করার অভিজ্ঞাতও নেই। তাই বাধ্য হয়ে এখনও চালিয়ে যাচ্ছি। বাসন কিনতে আসা আফরিন আক্তার জানান,আগে আত্রাইয়ের মির্জাপুর বাজারে আসলে পাল পাড়া থেকে প্রয়োজনীয় হাড়িপাতিল নিয়ে যেতাম,এখন বাসায় পর্যাপ্ত পরিমান সিরামিক ও প্লাস্টিক মালামাল থাকায় দিনদিন মাটির তৈরি জিনিস ব্যবহার অনেকটা কমিয়ে ফেলেছি।তবে মাঝে মাঝে এসে সখের বশে মাটির হাড়িপাতিল, মাটির ব্যাংক সহ কিছু জিনিস কিনে নিয়ে ঘর সাজাই।
পাল পরিবারদের দাবি, সরকার তাদের এ পেশাকে টিকিয়ে রাখতে কমসুদে ঋণ দিয়ে তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটাতে আর্থিক সহযোগিতা করুক।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

Copyright © Frilix Group
প্রযুক্তি সহায়তায় মাল্টিকেয়ার